শতমূলীর উপকারীতা ও গুণাগুণ অনেকেরই জানা নেই। শতমূলী আমাদের অনেকের পরিচিত একটি লতাজাতীয় ভেষজ উদ্ভিদ। সাধারণত শরৎকালে অর্থাৎ সেপ্টেম্বর-অক্টোবর মাসে এ গাছের মূল হয় এবং মাঘ-ফাল্গুনে এর ফল পাকে। কাঁচা অবস্থায় এর ফল সবুজ এবং পাকলে লাল হয়। এই উদ্ভিদের গোড়ায় একগুচ্ছ মূল হয়, এ মূলকে শতমূল বা শতমূলী বলে।সাধারণত উষ্ণ ও নাতিশীতোষ্ণ পরিবেশে শতমূলী গাছ ভালো জন্মে। আসুন আজ জেনে নিই শতমূলীর উপকারীতা ও গুণাগুণ সম্পর্কে-
শতমূলীর রাসায়নিক উপাদানঃ
শতমূলীতে রয়েছে উচ্চমানের ফলিক অ্যাসিড ও পটাশিয়ামের খুবই ভালো একটি প্রাকৃতিক উৎস। এছাড়াও এতে আরও আছে ফাইবার, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি৬। শতমূলী কাঁচা ও রান্না করে উভয়ভাবেই খাওয়া যায়।
শতমূলীর উপকারীতা ও গুণাগুণঃ
১। শতমূলী আমাদের হজমশক্তি র্বদ্ধি করে এবং বায়ু নিঃসরণে এটি দারূন কাজ করে। এজন্য শতমূলীর ফল অল্প পরিমাণ তরকারি রান্না করে খেতে হবে। এছাড়াও বাত-ব্যাথা ও স্নায়ু দুর্বলতায় শতমূলীর ছালের রসের সাথে রসুন পিসে একসাথে মিশিয়ে প্রলেপ দিলে ব্যাথা ভালো হয়ে যায়।
২। আমাশয় হলে শতমূলীর মূলর রস ৩-৪ চা চামচ ৩ থেকে ৭ দিন প্রতিদিন সকালে ও বিকালে আমাশয় ভালো হয়ে যায়। এছাড়াও এটি আমাদের অন্ত্রের কৃমি দূর করে এবং অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল হিসেবে কাজ করে।শতমূলী মূলর রস আমাদের যকৃত এবং পিত্ত থলির নানা ইনফেকশন রোধে অসাধারণ দারুণ কাজ করে ।
৩। শতমূলীর আমাদের উচ্চ কিংবা নিন্ম উভয় ধরনের রক্ত চাপকেই নিয়ন্ত্রণে রাখতে অনেক সহায়তা করে। শতমূলীর খেলে এতে থাকা পটাসিয়াম এবং বেশ কিছু উপকারী খনিজ উপাদান আমাদের রক্ত চাপ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
৪। অ্যাসিডিটি, শারীরিক দুর্বলতা, ব্যথা, ডায়রিয়া, আমাশয় ও শরীরের নানা প্রকার প্রদাহ দূর করতে শতমূলী অনেক কার্যকর। এছাড়াও এর শিকড় লিভার, কিডনি ও গনোরিয়ার জন্য অনেক উপকারী।এটি আমাদের নার্ভের কার্যক্ষমতা ঠিক রাখে এবং চোখ ও রক্তের যেকোনো সমস্যা দূর করে।
৫। স্নায়ুশক্তি বৃদ্ধি ও শারীরিক দুর্বলতা কাটাতে শতমূলী অনেক কার্যকর। এজন্য শতমূলীর রস ৩-৪ চামচ নিয়ে ১ গ্লাস দুধের সাথে মিশিয়ে সকাল ও বিকেলে পান করুন। ১০-১৫ দিন পান করলে উপকার পাওয়া যাবে। এছাড়াও শারীরিক, যৌন দূর্বলতা ও মহিলাদের সাদা স্রাব এসব সমস্যায় এর ৩-৪ গ্রাম পরিমান মূলচুর্ণ ১কাপ গরম দুধের সাথে মিশিয়ে দিনে দুবার পান করলে উপকার পাওয়া যায়।